22 March 2016

মির্জাপুর শাহী মসজিদ

মির্জাপুর শাহী মসজিদ

সামনের অংশ
প্রবেশদ্বার



উত্তর-পশ্চিম দিক

এক সারিতে তিনটি গম্বুজ

সামনের দরজা

সুদৃশ্য টেরাকোটা

নান্দনিক নকশা 

সামনের পিলার

পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারি উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে রয়েছে নিপুণশৈলিতে নির্মিত সৃদৃশ্য একটি মসজিদ যা মির্জাপুর শাহী জামে মসজিদ নামে পরিচিত। তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট এবং প্রস্থ ২৫ ফুট। গম্বুজ তিনটি এক সারিতে অবস্থিতমসজিদের নির্মাণ সম্পর্কে পারস্য ভাষায় লিখিত মধ্যবর্তী দরজার উপরিভাগে একটি কালো পাথরের ফলক রয়েছে । তুঘরা রীতিতে লিখিত এ শিলালিপির ফলকের ভাষা ও লিপি অনুযায়ী ধারণা করা হয়, মোঘল সম্রা্ট শাহ আলমের রাজত্বকালে এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। দোস্ত মোহম্মদ নামে এক ব্যক্তি এর নির্মাণ কাজ শেষ করেন। শিলালিপি থেকে মির্জাপুর শাহী মসজিদের আদি নির্মাতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায় না।

শিলালীপিতে মসজিদ প্রতিষ্ঠার তথ্য
মির্জা বংশের অভিমত, মির্জাপুর গ্রামের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পুরুষ ফুল মোহাম্মদ এ মসজিদ নির্মাণ শুরু করেন। পরে ফুল মোহাম্মদের ভাই দোস্ত মোহাম্মদ এর নির্মাণ কাজ শেষ করেন। প্রবল ভূমিকম্পে এক সময় মসজিদটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মুলুকউদ্দীন মসজিদটির মেরামত ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ সম্পন্ন করেন। কথিত আছে, তিনি হুগলির মসজিদের ইমামের মাধ্যমে ইরান থেকে কারিগর এনেছিলেন।
১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত ঢাকা হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত মসজিদের সাথে মির্জাপুর শাহী মসজিদের নির্মাণশৈলীর মিল রয়েছে। তাই ধারণা করা হয়, ঢাকা হাইকোর্ট প্রাঙ্গনে অবস্থিত মসজিদের সমসাময়িককালে মির্জাপুর শাহী মসজিদের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় এবং সম্ভবত নির্মাতা ছিলেন একই ব্যক্তি। 
মসজিদটির দেওয়ালে টেরাকোটায় ফুল এবং লতাপাতার নকশা খোদাই করা রয়েছে। সামনের অংশে আয়তাকার টেরাকোটার নকশার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে  একটির সাথে অপরটির কোন মিল নেই। প্রত্যেকটি পৃথক পৃথক।
সামনের দেয়ালে রয়েছে লতাপাতার নকশাখচিত ছোট আকৃতির তিনটি দরজা। তিনটি দরজাতেই ছাদ ও দরজার উপরিভাগের মাঝামাঝি স্থানে বাইরের দিকে উভয় পাশে ঢালু তোরণাকৃতির অংশ সংযুক্ত হওয়ায় অলংঙ্করণে যুক্ত হয়েছে নান্দনিকতা।



নিয়মিত নামাজ আদায় হয়

ইমামবাড়া

মির্জাপুর শাহী মসজিদটির 20-25 ফুট দক্ষিণ দিকে রয়েছে মির্জাপুর ইমামবাড়া। ভুমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে বিলীন হতে বসা এ ইমামবাড়ার বর্তমানে বেশকিছু সংস্কার করা হয়েছে। ভেঙে যাওয়া ছাদের অংশে পুরোনো রূপ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। পোড়ামাটির ইট নির্মিত ইমামবাড়া পোড়ো বাড়ি মনে হয়। এর প্রবেশপথ দিয়ে তাকালে একে কোন মন্দিরের অভ্যন্তরভাগের মতো মনে হয়। দক্ষিণমুখী মূল কক্ষের ভেতরে রয়েছে আরো একটি ছোট কক্ষ যার দরজা পূর্বমুখী। এর ছাদে রয়েছে একটি বড় গম্বুজ। সামনে এবং পাশে রয়েছে বাঁধানো কয়েকটি কবর।
মসজিদ এবং ইমামবাড়াকে অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে হয়।
ইমামবাড়ার প্রাঙ্গনের দৃশ্য



পোড়ামাটির স্থাপত্য

ইমামবাড়ার ভেতরের স্যাতস্যাতে দৃশ্য

ভেতরে অন্ধকারের বসতি আর অবহেলার রাজত্ব

পাশের করিডোর

করিডোর

ক্ষয়ে যাওয়া সৌন্দর্য

বহিরাঙ্গন

প্রবেশদ্বার

পঞ্চগড় জেলার ধাক্কামারা বাসস্ট্যান্ড থেকে লোকাল বাসে আটোয়ারি উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে যাওয়া যায়। আটোয়ারী থেকে বাসযোগে মির্জাপুর ৬ কিলোমিটার। মির্জাপুর বাজার থেকে পূর্ব দিকে রাস্তায় গ্রামের ভিতরের দিকে অবস্থিত মির্জাপুর জামে মসজিদ।

 Mirzapur Shahi Jam-E-Mosque
 Mirzapur Imambara

No comments:

Post a Comment

বালিয়া মসজিদ জ্বীনের মসজিদ  স্থানীয়ভাবে এবং লোকমুখে জ্বীনের মসজিদ নামে পরিচিত এ মসজিদটির প্রকৃত নাম ‘বালিয়া মসজিদ’। জমিদার মেহের বকস চৌধুরী ...