যদি মনে করেন নাগরিক জীবনে ধোঁয়া আর কলকব্জা দেখে নষ্ট হয়ে গেছে দৃষ্টির প্রশান্তি, তাহলে চলে যান সবুজ ঘাসের কাছে, কোমল আর গাঢ় সবুজের মখমল বিছানা দেখে আসতে পারেন গ্রামবাংলার কোন এক স্থান থেকে। অনেক কিছুর মতোই পঞ্চগড় গিয়ে দেখে আসতে পারেন চা বাগান।
সমতলেও যে চা বাগান হতে পারে তার প্রমাণ পঞ্চগড়ের চা বাগানগুলো। মূলত ভারতের তেঁতুলিয়া সীমান্ত ঘেষে গড়ে ওঠা সমতলের চা বাগান দেখে অনুপ্রাণিত হওয়া এ অঞ্চলের চা বাগানগুলি। তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের রওশনপুর গ্রামে কাজী শাহেদ দেশের প্রথম ও সবচেয়ে বড় ৬০০ একরের অর্গানিক চা বাগান ‘কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট’ গড়ে তুলেছেন। কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট ৬/৭ বছরের মধ্যে চা পাতা আহরণ শুরু করে বছরে বর্তমানে ১ লক্ষ ৭২ হাজার কেজি চা উৎপাদন করছে। এ অঞ্চলে চা চাষের ক্ষেত্রে কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট অগ্রপথিক। এদের সফলতা অনুসরণ করে বর্তমানে এখানে আরো ৪টি চা বাগান গড়ে উঠেছে : তেঁতুলিয়া চা কর্পোরেশন লিঃ, স্যালিন্যাল টি এস্টেট, নাহিদ টি এস্টেট, করতোয়া টি এস্টেট ও ডাহুক টি এস্টেট। স্থানীয়ভাবে ক্ষুদ্র প্রান্তিক চাষিদের উদ্যোগে প্রায় ৫০/৬০টি চা বাগান গড়ে উঠেছে। বিস্তৃত বিশাল অঞ্চল ঘিরে গড়ে ওঠা এখানকার চা বাগান। মাঝখান দিয়ে শুকিয়ে যাওয়া নদীর মতো ধূরোওড়া একটি প্রশস্ত মাটির রাস্তা। দু ধার দিয়ে এক সমানে বেড়ে উঠেছে চা গাছ। রওশনপুরের আনন্দধারার কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেটে যেতে কারো মানা নেই। সবুজ চা বাগানের বিছানা আপনার ভেতরে সঞ্চারিত করবে প্রাণাবেগের, চোখজুড়ে ঢেলে দেবে প্রশান্তি। শালবাহান ইউনিয়নের লোহাকাচি গ্রামে আছে ৭০ একর জায়গা জুড়ে ময়নাগুড়ি টি এস্টেট।
বাগানের মধ্যে ছায়া তরু বা শেড ট্রি হিসেবে লাগানো হয়েছে অনেক ঔষধিগাছ। আছে কিছু ফুলে গাছও। তেতুলিয়ার চা বাগান সিলেট বা চট্টগ্রামের মতো উচুঁ নিচু নয়, একবারেই সমতল। আর এখানে বিশিষ্ট দার্জিলিং টিসহ নানা ধরণের অর্গানিক চা উৎপন্ন হয়।
আলোছায়া দূর করে দেবে নাগরিক চোখের ক্লান্তি
বাগানের ভেতরে আছে মাটির রাস্তা
বিশালায়তনের অর্গানিক চা বাগান
সমতলের চা বাগান
ছায়াে দেবার মতো আছে নানা ধরণের ঔষধী গাছ
চা বাগানের গাছে ফোটা ফুল
চোখজুড়ে দেখবেন সবুজের মখমল বিছানা
এমন ফুলের গাছও আছে।
কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট-এর বাংলো প্রাচীর। প্রকৃতির কোলে অবাধ স্বাধীন নানা জাতের গাছ ও পাখি।
No comments:
Post a Comment