এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় দেশ হারাল প্রতিভাবান দুই কৃতী সন্তানকে। দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্র পরিচালক তারেক মাসুদ এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আশফাক মুনীর মিশুকসহ ৫ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, চিত্রশিল্পী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ঢালী আল-মামুন ও তার স্ত্রী দিলারা বেগম জলি।
তারেক মাসুদ ভিন্নধারার চলচ্চিত্রকার হিসেবে নিজের একটি ইমেজ প্রতিষ্ঠা করতে সৰম হন। তাঁর মুক্তির গান চলচ্চিত্রটি মুক্তিযুদ্ধের একটি অনন্য দলিল হিসেবে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদকে নিয়ে তিনি সারাদেশ এই চলচ্চিত্রটি দেখিয়ে বেড়ান। নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে এই চলচ্চিত্রটি বিশেষ অবদান রাখে। মুক্তির গান এবং মাটির ময়না চলচ্চিত্রের জন্য আনত্মর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত হন চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ।
অন্যদিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে মিশুক মুনীর দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন। একুশে টেলিভিশন চালু হওয়ার সময় হেড অব অপারেশন্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস, চ্যানেল ফোর ও সিবিসি টেলিভিশনের ক্যামেরা অপারেটর হিসেবে কাজ করেন। গত বছর দেশে ফিরে এটিএন নিউজের সিইওর দায়িত্ব নেন। বাংলাদেশে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের আজ যে ব্যাপক প্রসার তার অন্যতম পথিকৃতের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এই গুণী দুই ব্যক্তিত্বের মৃতু্য তাই অপূরণীয় এক ৰতি।
শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় মিশুক মুনীর ও তারেক মাসুদকে বহনকারী মাইক্রোবাসটির সঙ্গে একটি যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃতু্য হয়। 'কাগজের ফুল' নামে একটি ছবির জন্য শূটিং স্পট ঠিক করে তাঁরা ঢাকায় ফিরছিলেন। কিন্তু কে জানত নিজেরাই কাগজের ফুল হয়ে যাবেন চিরদিনের জন্য। আর ফুটবেন না কোনদিন। কেউ বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না দুর্ঘটনা এভাবে দেশের দুই সৃজনশীল প্রতিভাকে কেড়ে নেবে। মৃতু্যর খবর গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরই সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে আসে।
একই দিন পাবনায় অপর একটি দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। বলার অপেৰা রাখে না সড়ক দুর্ঘটনা এখন অন্যতম জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। সঙ্গত কারণেই এই সমস্যা থেকে মানুষজনকে মুক্ত রাখার সার্বিক পদক্ষেপ গ্রহণকে সর্বোচ্চ গুরম্নত্ব দিয়ে দেখা জরম্নরী।
দুর্ঘটনার কারণগুলো সম্পর্কে সংশিস্নষ্ট সকলেই কমবেশি জানেন। এই সমস্যা বারংবার চিহ্নিত হলেও এর কোন প্রতিকার নেই। প্রতিবার দুর্ঘটনার পর পরই একটি তদনত্ম কমিটি গঠন করা হয়। সেই তদনত্ম প্রতিবেদন কোনদিন আলোর মুখ দেখে না। আর সঙ্গত কারণেই দোষীদের শাসত্মিও হয় না। সমাজের উঁচু সত্মর থেকে নিচু শ্রেণীর মানুষ_ যাঁরাই দুর্ঘটনার শিকার হোন না কেন কোন একটি ঘটনার বিচার হয়েছে এমন দৃষ্টানত্ম মেলা ভার। আর বিচারহীন, প্রতিকারহীন অবস্থায় কোন কিছু চলতে থাকলে সেটির পুনরাবৃত্তিও তো ঘটবেই। প্রশ্ন হচ্ছে, কত প্রাণ গেলে, মৃতু্যর মিছিল কত দীর্ঘ হলে তবে থামবে এই দুর্ঘটনানামক হত্যাযজ্ঞ?
Courtesy: Jonokontho
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
-
SOME IMPORTANT NOTES ABOUT SUBJECTS AND VERBS: 1. The subject of a sentence is either a NOUN or a PRONOUN. It is helpful to think of a PRON...
-
নতুন রুট সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না পেলে এগোবে না জাইকা পথহারা মেট্রোরেল এ কে এম জাকারিয়া ও আনোয়ার হোসেন ...
-
Watch & Download Bangla Movies: Download Links http://www.mediafire.com/file/kjzf70kapr0zs0l/Antaheen.700-DDR.mkv.00...
No comments:
Post a Comment